রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১ পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক টেকনাফের পাহাড়ে জেল ফেরত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার টেকনাফে ৭ লাখ টাকা মালামাল নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারি স্থল বন্দরের বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানি কারক সিআইপি ওমর ফারুক টেকনাফের নিকটবর্তী মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত : গুলি আসছে স্থলবন্দর ও আশে-পাশের এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের উন্নয়নে ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ‘মাস্টার প্ল্যান’

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজারের পরিকল্পিত উন্নয়নে নতুন করে আবারো ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরীর কাজ শুরু করেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু হওয়া ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৪ কোটি টাকা। যা চুড়ান্ত করতে সময় লাগবে ২ বছর পর্যন্ত। এর মধ্যে ৬ মাস রাখা হয়েছে অভিযোগ শোনার জন্য। পরের ৬ মাস এসব অভিযোগের পর্যালোচনা শেষ করে চুড়ান্ত কাজের পরিধি নির্ধারণ করা হবে। প্ল্যানটি সরকার থেকে অনুমোদন নিয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ হতে ৩ বছরের মত সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

যদিও এর আগে ২০১৩ সালে কক্সবাজারের উন্নয়নে আরো একটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ করা হয়েছিল। যা সরকার অনুমোদনও দিয়েছে। কক্সবাজার শহর ও সমুদ্র সৈকতের কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এলাকা ঘীরে এই মাস্টার প্ল্যান তৈরী করে ছিল নগন উন্নয়ন অধিদপ্তর। ওই প্ল্যান্ট তৈরী করতে কত ব্যয় হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি দায়িত্বশীল কোন প্রতিষ্ঠান।

তবে ২০১৩ সালে অনুমোদিত মাস্টারপ্ল্যানটি বাস্তব সম্মত নন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফোরকান আহমদ। তিনি জানান, যে বা যারা প্ল্যান্ট তৈরী করেছেন তারা কেউ মাঠ পর্যায়ে কাজ করেননি। সম্ভবত ঢাকায় বসে প্ল্যান করা হয়েছে। ফলে প্ল্যানতে একটি ১০ ফিটের রাস্তা ১০০ ফিট করার পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে। যা করা সম্ভব নয়। ফলে নতুন করে মাস্টার প্ল্যান তৈরী করতে হচ্ছে।

নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সেলটেক নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চেষ্টা করে তৈরী করে কক্সবাজার পর্যটন এলাকার মাস্টার প্ল্যানটি। কিন্তু এটি বাস্তবতার নিরিখে অনেক গরমিল দেখা গেছে।

প্ল্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কক্সবাজার পৌরসভার টেকপাড়ার উকিলপাড়া এলাকাটি একটি আবাসিক এলাকা হলেও এটিকে মাস্টারপ্ল্যানে দেখানো হয়েছে বাণিজ্যিক এলাকা বলে। আবার শহরের পাহাড়তলীর কচ্ছপিয়া পুকুরের পূর্ব এলাকাকে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা বলে মাস্টারপ্ল্যানে উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে একটি আবাসিক এলাকা। কক্সবাজার সদর উপজেলার লাগোয়া উত্তর পাশের এলাকাটি একটি আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে। সেটিকেও মাস্টারপ্ল্যানে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ কক্সবাজর সড়কের সংযোগস্থল লিংক রোড এলাকাটি একটি বাণিজ্যিক এলাকা হলেও সেটিকে মাস্টার প্ল্যানে উল্লেখ করা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা হিসেবে। এসব কারণে নতুন করে মাস্টার প্ল্যান করা জরুরী বলে মনে করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফোরকান আহমদ জানান, ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করে দেশে এই প্রথম কোন মাস্টার প্ল্যান করার কাজ শুরু করা হয়েছে। উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাভূক্ত কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত মোট ৬৯০ দশমিক ৬৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ঘীরে হবে এই পরিকল্পনা। যা হবে কক্সবাজারে বসেই।

আগের প্ল্যানটা ঢাকায় বসে করার কারণে বাস্তব সম্মত না হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাস্তব সম্মত এবং সকলকে সাথে নিয়ে মহাপরিকল্পনাটি করা হচ্ছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় যুক্ত থাকবে। কোথায় আবাসিক এলাকা, কোথায় হাসপাতাল, মাকের্ট, কৃষি জমি, উন্মুক্ত স্থান, রাস্তা কত বড় হবে তা পরিষ্কারভাবে করা হবে।

কারা এই পরিকল্পনা তৈরী করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান জানান, বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি) এটি মুল দায়িত্বে রয়েছেন। যারা ৭ টা গ্রুপকে টেন্ডারের মাধ্যমে ডেকেছিল। ৭ টি গ্রুপ থেকে বাছাই করে এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশি একটা কোম্পানী ‘সেলটন’কে ঠিক করা হয়েছে; সেটার সঙ্গে আমেরিকান কোম্পানী ‘সাসাকি’ও যৌথভাবে কাজ করছে। তারা (কোম্পানী দু’টো) কউক ভবনে বসেই প্রজেক্টটার কাজ সম্পন্ন করবে।

তিনি জানান, এখন থেকে চুড়ান্তভাবে নির্বাচন করা কোম্পানী দুইটি এখানে (কউক ভবনে) কাজ করবে। ড্রোন সার্ভে চলমান রয়েছে। শুধুমাত্র সেন্টমার্টিনের ড্রোন সার্ভেটা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারের কিছু অংশেরও ড্রোন সার্ভে হয়েছে। পুরো ৯ টি উপজেলায় এ ড্রোন সার্ভে করা হবে। প্ল্যান্ট করতে কক্সবাজারের সকল সংস্থা ও প্রতিষ্টানের সব প্রতিনিধিদের নিয়ে মতামত বা সমন্বয় সভা করা হবে। সর্বোত চেষ্টা থাকবে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদেরকে পর্যন্ত এতে সমন্বয় করার।

তিনি জানান, মহাপরিকল্পনাটি চুড়ান্ত করার মেয়াদকাল ২ বছর পর্যন্ত। এর মধ্যে ৬ মাস রাখা হয়েছে অভিযোগ শোনার জন্য। পরের ৬ মাস এসব অভিযোগের পর্যালোচনা শেষ করে চুড়ান্ত কাজের পরিধি নির্ধারণ করা হবে। সব কিছু ঠিকঠাক মত সম্পন্ন করে সরকার থেকে অনুমোদন নিয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ হতে ৩ বছরের মত সময় লাগবে। তিন বছরের এই সময়কালের ইতিমধ্যে ৫/৬ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফোরকান আহমদ জানান, মহাপরিকল্পনার চুড়ান্ত করার এ অন্তবর্তীকালীন সময়ে কাজ থেমে থাকবে না। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নকারি সংস্থা দু’টি যে ধরণের শর্ত ও বিধিমালা নির্ধারণ করে দেবে; সেটার ভিত্তি কউক প্ল্যান অনুমোদন দিতে থাকবে। শুধু চুড়ান্ত অনুমোদনটা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরে আবার অনুমোদন করে নিবে। কউক এখন শুধু অস্থায়ীভাবে প্ল্যানটা অনুমোদন দেবে। আগামী ৩/৪ মাস পর থেকে মহাপরিকল্পনা চুড়ান্তকারি সংস্থা দুইটি যে ধরণের ড্রাফট বা কাঠামো ঠিক করে দেবে সেটার ভিত্তিতেই অস্থায়ীভাবে প্ল্যান অনুমোদন দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888